
সয়াবিন তেলের নতুন দাম এখনো কার্যকর হয়নি যশোরের বাজারে। বিক্রেতারা নানা ছলছুতোয় অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। এ কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্রেতারা। গত সপ্তাহের মাঝামাঝি বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৭৮ টাকা নির্ধারণ করলেও তার প্রভাব পড়েনি যশোরের বাজারে। খোলা সয়াবিন তেল লিটারে ১৭, বোতলজাত সয়াবিন ১৪ এবং পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলে ৬৫ টাকা কমানো হয়েছে। সেই হিসেবে খোলা সয়াবিন তেলের দাম হওয়ার কথা ১৫৮, বোতলজাত এক লিটার ১৭৮ ও পাঁচ লিটার সয়াবিন ৮৮০টাকা।
কিন্তু গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত যশোরের বাজারে এই দামের প্রতিফলন দেখা যায়নি। এদিন খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ১৭২ টাকা কেজিতে। বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ১৮২ টাকা লিটারে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। বড় বাজারের মুদি দোকানি গোলাম মোস্তফা গাজী বলেন, তার মতো অনেকেই নতুন সয়াবিন তেল দোকানে তুলতে পারেনি। ফরিদুল ইসলাম বলেন, সবার দোকানেই আগের সয়াবিন মজুত আছে। এ কারণে নতুন দামে বিক্রি করতে পারছেন না। ক্রেতা ইফফাত আরা নার্গিস বলেন, দাম কমিয়ে কী লাভ হলো যদি ক্রেতারা তার সুফল ভোগ করতে না পারে।
কমেনি চাল, ডিম, মসলা, মুরগিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজিতে। কেজিতে পাঁচ টাকা কমে প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১৩০ টাকায়। মুগ ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। পাঁচ টাকা বেড়ে বুটের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। ছোলার ডাল ৭৫ টাকা। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯২ টাকা কেজিতে।
বেড়েছে কাঁচমরিচের ঝাঁঝ। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। খানিকটা কমেছে সবজির দাম। ঢেড়শ, কাঁচকলা, করলা, কচুরলতি, বাধাকপি, মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০, উচ্ছে ৮০, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, মুখি, কাঁকরোল ও বরবটি ৫০, শিম ৮০ থেকে ১০০, বেগুন ৮০ থেকে ৯০, ফুলকপি ১২০, লাউ সাইজ অনুযায়ী ৩০ থেকে ৫০ ও চালকুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্বস্তি ফেরেনি চালে। স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। মিনিকেট ৬৭ থেকে ৬৯, কাজললতা ও আঠাশ ৬০ থেকে ৬২ এবং বাসমতি ও নাজিরশাইল ৮০ টাকায়। চাল ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, সরকার চাল আমদানি করার ঘোষণা দিয়েছে, তাছাড়া সামনে নতুন চালের মৌসুম আসছে। তখন চালের দাম কিছুটা কমতে পারে। অন্যদিকে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫২০ টাকা কেজিতে। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০টাকায়। লবঙ্গের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা। প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। রসুনের দাম ৬০ থেকে ১৫০ টাকা। আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে।
শুক্রবার ইলিশ শূন্য ছিল যশোরের বাজার। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৮ অক্টোবর আবারও ইলিশের বেচাকেনা শুরু হবে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ইলিশের বেচাকেনা চলে। ওইদিন প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হয় সর্বনি¤œ ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকায়। মাছ বিক্রেতা এরশাদ আলী বলেন, ২৮ অক্টোবরের পরে ইলিশের দাম কিছুটা কমতে পারে। তখন ভারতে মাছ কম যাবে। দেশীয় বাজারেও সরবরাহ বেশি থাকবে। তাই দামও কমে আসবে।